এবিএনএ : যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসের টিকা এলে তা নিতে মানুষের আগ্রহের বিষয়ে জানতে একটি জরিপ পরিচালনা করেছে বিখ্যাত গবেষণা প্রতিষ্ঠান পিউ রিসার্চ সেন্টার। এতে দেখা গেছে, যদি ভ্যাকসিন আজই পাওয়া যায়, তারপরও সেটি নিতে রাজি নন প্রায় অর্ধেক মার্কিনি। ভ্যাকসিন তৈরির দ্রুতগতি নিয়ে সন্দিহান এই মার্কিনিরা সুরক্ষার চেয়ে এটি ব্যবহার করে রাজনৈতিক ফায়দা লাভই বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন। গত ৮ থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ১০ হাজার প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের ওপর ওই সমীক্ষা চালিয়েছে ওয়াশিংটনের পিউ রিসার্চ সেন্টার। এতে দেখা যায়, আজই করোনার টিকা আবিষ্কার হলে, তা নিতে চান মাত্র ৫১ শতাংশ মার্কিনি। বাকি ৪৯ শতাংশ তা নিতে চান না।
বিশ্বে এখন পর্যন্ত করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে করোনার সংক্রমণ দ্রুতগতিতে আবারও বাড়তে শুরু করেছে। রোববার জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বলছে, দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭০ লাখ ৭৮ হাজার ছাড়িয়েছে। এতে মারা গেছেন ২ লাখ ৯ হাজারের বেশি।
মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই টিকা নিয়ে মার্কিনিদের এই মত বদলের কারণ কি? জরিপে অংশগ্রহণকারীদের অধিকাংশ বলছেন, কোভিড-১৯ টিকা যে গতিতে তৈরি হচ্ছে, তাতে বৈজ্ঞানিক মানদণ্ড অনুসরণের পরিবর্তে রাজনৈতিক স্বার্থ বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে। জরিপে অংশ নেয়া ৭৭ শতাংশের শঙ্কা, টিকার কার্যকারিতা বা সুরক্ষা সংক্রান্ত বিষয়গুলো সঠিকভাবে যাচাই না করেই তা প্রয়োগের অনুমতি দিতে পারে মার্কিন সরকার। গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহানে করোনাভাইরাস উৎপত্তি হওয়ার পর বিশ্বের দুই শতাধিক দেশে ছড়িয়ে প্রাণ কেড়েছে ৯ লাখ ৯৯ হাজারের বেশি। আক্রান্ত ছাড়িয়েছে ৩ কোটি ৩১ লাখ।
মহামারির তাণ্ডব অব্যাহত থাকলেও রাশিয়া ছাড়া কোনও দেশই এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন আনতে পারেনি। করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরির দৌড়ে এখনও নেতৃত্বের আসনে রয়েছে চীন। দেশটির অন্তত চারটি ভ্যাকসিন শেষ ধাপের পরীক্ষায় পৌঁছেছে; যা বিশ্বের যেকোনও দেশের চেয়ে বেশি। চীনের পরই আছে যুক্তরাষ্ট্র; দেশটির তিনটি ভ্যাকসিন শেষ ধাপের পরীক্ষায় রয়েছে। মার্কিন ওষুধপ্রস্তুতকারক কোম্পানি ফাইজার বলছে, অক্টোবরের শুরুতেই তারা করোনা ভ্যাকসিনের জরুরি ব্যবহারের অনুমতির জন্য আবেদন করবে। দেশটির আরেক কোম্পানি মডার্না চলতি বছরের শেষের দিকে ভ্যাকসিন আনার আশাপ্রকাশ করেছে।
Share this content: